ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক রূপ’ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে : ছাত্রলীগ

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪
  • 34

সিনিয়র রিপোর্টার

কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক রূপ’ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করে ছাত্রলীগ। রাজপথ অবরোধের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ তৈরি না করে তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি। এ সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি অনতিবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানায় ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ অব্যাহত রাখা, জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে আসা এবং কোটা ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইতিবাচক সমাধানের দাবিতে’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এতে বলা হয়, কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে সরকারি চাকরিতে চলতি সময়ে আর কোনো কোটাব্যবস্থা প্রচলিত নেই। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে কোটাব্যবস্থা তুলে দেওয়ায় নারীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যায়। যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য অন্তরায় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

কোটা উঠে যাওয়ার পর উন্নয়নের মূলধারা থেকে নারীরা ছিটকে পড়েছেন। অন্যদিকে জেলা কোটা না থাকায় বঞ্চিত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। একইভাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্যও এ কথা প্রযোজ্য। সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষাতে একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয়। তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয়, যা পুরোপুরি ন্যায় ও সংবিধানসম্মত।

আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, বিচারিক প্রক্রিয়ায় পক্ষভুক্ত হয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে না ধরে আন্দোলনের নামে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলছে। যা কোনোভাবেই যৌক্তিক পদক্ষেপ নয়। এই আন্দোলনের কারণে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। হাসপাতালে রোগীদের যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনীয় সম্পদ (যেমন তেল, গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন) দুরূহ হয়ে উঠছে। কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা অচল হয়ে যাচ্ছে।

আন্দোলন-আন্দোলন খেলা ও ‘হিরোইজম’ প্রদর্শনের এই মানসিকতা দেশের শিক্ষিত তরুণসমাজের প্রতি সাধারণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। এমন অবস্থায় কোটা বাতিল বা সংস্কারের জন্য দেশব্যাপী যে আন্দোলন হচ্ছে, সে সম্পর্কে পুনঃভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। নিজেদের দাবি ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি আন্দোলনকারীরা কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না। বিষয়টি এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, যেন সাধারণ জনগণ বনাম শিক্ষার্থী-এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে।

ট্যাগস

আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক রূপ’ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে : ছাত্রলীগ

আপডেট সময় ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে ‘রাজনৈতিক রূপ’ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে মনে করে ছাত্রলীগ। রাজপথ অবরোধের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ তৈরি না করে তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি। এ সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি অনতিবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানায় ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ অব্যাহত রাখা, জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে আসা এবং কোটা ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইতিবাচক সমাধানের দাবিতে’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এতে বলা হয়, কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে সরকারি চাকরিতে চলতি সময়ে আর কোনো কোটাব্যবস্থা প্রচলিত নেই। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে কোটাব্যবস্থা তুলে দেওয়ায় নারীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ সংকুচিত হয়ে যায়। যা দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য অন্তরায় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

কোটা উঠে যাওয়ার পর উন্নয়নের মূলধারা থেকে নারীরা ছিটকে পড়েছেন। অন্যদিকে জেলা কোটা না থাকায় বঞ্চিত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। একইভাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্যও এ কথা প্রযোজ্য। সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষাতে একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয়। তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয়, যা পুরোপুরি ন্যায় ও সংবিধানসম্মত।

আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, বিচারিক প্রক্রিয়ায় পক্ষভুক্ত হয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে না ধরে আন্দোলনের নামে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলছে। যা কোনোভাবেই যৌক্তিক পদক্ষেপ নয়। এই আন্দোলনের কারণে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। হাসপাতালে রোগীদের যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনীয় সম্পদ (যেমন তেল, গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন) দুরূহ হয়ে উঠছে। কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা অচল হয়ে যাচ্ছে।

আন্দোলন-আন্দোলন খেলা ও ‘হিরোইজম’ প্রদর্শনের এই মানসিকতা দেশের শিক্ষিত তরুণসমাজের প্রতি সাধারণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। এমন অবস্থায় কোটা বাতিল বা সংস্কারের জন্য দেশব্যাপী যে আন্দোলন হচ্ছে, সে সম্পর্কে পুনঃভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। নিজেদের দাবি ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি আন্দোলনকারীরা কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না। বিষয়টি এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, যেন সাধারণ জনগণ বনাম শিক্ষার্থী-এমন একটি অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে।