ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা আন্দোলনকারীদের অনেক দাবি ও বক্তব্য সংবিধানবিরোধী : ওবায়দুল কাদের

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
  • 44

সিনিয়র রিপোর্টার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোটার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একটা কুচক্রী মহল কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে। এ সময় সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের অনেক দাবি ও বক্তব্য সংবিধান এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৩ জুলাই) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আন্দোলন সংবিধানের বিরুদ্ধে বা আদালতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোটা নিয়ে  আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, পবিত্র সংবিধানের আলোকেই রাষ্ট্র পরিচালনা হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র। মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক অসাম্য নিরোধের জন্য নাগরিকদের মধ্যে সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে। অথচ গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হতাশাজনকভাবে কমেছে। কোটা না থাকায় পুলিশে মাত্র চার জন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছে, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র দু’জন। ৫০টি জেলার নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেওয়ার সুযোগ পায়নি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পায়নি। সংবিধানের উল্লিখিত বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিসহ সব খাতে সবাই যেন সমানভাগে সুযোগ পায়। সেজন্যই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় নিয়োগ পায় ৭০ শতাংশের মতো। ৩৩, ৩৪, ৩৫তম বিসিএসে ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ২৮ শতাংশ। শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে, সেখানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই কোটার ভিত্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেওয়া হয়। ভারতে ৬০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৯২.৫ শতাংশ, নেপালে ৪৫ শতাংশ এবং শ্রীলংকার ৫০ শতাংশ চাকরিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে ৬০ শতাংশ কোটা চালু রয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন রয়েছে। বিদ্যমান অন্তর্ভুক্তি এটা যৌক্তিক।

শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে- এমন অভিযোগ করে কাদের বলেন, ২০১৮ সালে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়, তখন রাজনৈতিকভাবে পরাজিত অশুভ শক্তি এই আন্দোলনের ওপর ভর করেছিল। নিরাপদ সড়কের আন্দোলনেও ভর করে রাজনৈতিক রূপ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তখন এই অশুভ শক্তির হাতে আমাদের ধানমন্ডি পার্টি অফিসও আক্রান্ত হয়েছে। ওই মহলটি রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করার জন্য এবং এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরির ক্ষেত্র প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তারুণ্যের শক্তিতে আস্থা রাখে। আমরা বিশ্বাস করি, তারুণ্যের সবাইকে নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে সমান সুযোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বি এম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাপা প্রমুখ।

ওবায়দুল কাদের, কোটাবিরোধী আন্দোলন

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা আন্দোলনকারীদের অনেক দাবি ও বক্তব্য সংবিধানবিরোধী : ওবায়দুল কাদের

আপডেট সময় ০৫:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোটার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একটা কুচক্রী মহল কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে। এ সময় সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের অনেক দাবি ও বক্তব্য সংবিধান এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৩ জুলাই) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আন্দোলন সংবিধানের বিরুদ্ধে বা আদালতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোটা নিয়ে  আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, পবিত্র সংবিধানের আলোকেই রাষ্ট্র পরিচালনা হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র। মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক অসাম্য নিরোধের জন্য নাগরিকদের মধ্যে সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে। অথচ গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হতাশাজনকভাবে কমেছে। কোটা না থাকায় পুলিশে মাত্র চার জন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছে, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র দু’জন। ৫০টি জেলার নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেওয়ার সুযোগ পায়নি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পায়নি। সংবিধানের উল্লিখিত বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিসহ সব খাতে সবাই যেন সমানভাগে সুযোগ পায়। সেজন্যই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় নিয়োগ পায় ৭০ শতাংশের মতো। ৩৩, ৩৪, ৩৫তম বিসিএসে ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ২৮ শতাংশ। শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে, সেখানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই কোটার ভিত্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেওয়া হয়। ভারতে ৬০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৯২.৫ শতাংশ, নেপালে ৪৫ শতাংশ এবং শ্রীলংকার ৫০ শতাংশ চাকরিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে ৬০ শতাংশ কোটা চালু রয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন রয়েছে। বিদ্যমান অন্তর্ভুক্তি এটা যৌক্তিক।

শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে- এমন অভিযোগ করে কাদের বলেন, ২০১৮ সালে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়, তখন রাজনৈতিকভাবে পরাজিত অশুভ শক্তি এই আন্দোলনের ওপর ভর করেছিল। নিরাপদ সড়কের আন্দোলনেও ভর করে রাজনৈতিক রূপ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তখন এই অশুভ শক্তির হাতে আমাদের ধানমন্ডি পার্টি অফিসও আক্রান্ত হয়েছে। ওই মহলটি রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করার জন্য এবং এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরির ক্ষেত্র প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তারুণ্যের শক্তিতে আস্থা রাখে। আমরা বিশ্বাস করি, তারুণ্যের সবাইকে নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে সমান সুযোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বি এম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাপা প্রমুখ।

ওবায়দুল কাদের, কোটাবিরোধী আন্দোলন