ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিআইডব্লিউটি-এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আইয়ুব আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির উপাখ্যান  : রয়েছেন বহাল তবিয়াতে

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
  • 146
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিআইডব্লিউটিএ ‘র  তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে চাকরির শুরু থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। সব সময় তিনি এই সব অভিযোগ থেকে পার পেয়ে যান কোন এক আধ্যাত্মিক  হাতের কারনে। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা, করেছেন গাড়ি, বাড়ি, ফ্লাট ও প্লট। সু’চতুর আইয়ুব আলী যখন যে চেয়ারম্যান আসে তাকে ম্যানেজ করে চলেন বলে অফিস পাড়ায় গুঞ্জন রয়েছে । আর যার মাধ্যমে  ভাগিয়ে নেন বড় বড় প্রকল্প। বিআইডব্লিউটিএ সুত্রে জানা যায়, নদী খননে ৩শ কোটি টাকায় কেনা বিদেশি ১১টি ড্রেজারের কারিগরি মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নদী খননসহ ও নিয়মিত পলি অপসারণে ২টি ড্রেজার প্রকল্পের আওতায়’ ২০১১ সালে ৩টি এবং ১০টি ড্রেজার প্রকল্পের আওতায়’ ২০১৪ সালে দুদফায় ৮টি খনন যন্ত্র কেনে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কেনার ৫ বছরের মধ্যেই এসব ড্রেজার কার্যক্ষমতা হারাতে বসেছে। তিনটি ড্রেজার অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অন্য খননযন্ত্রের অবস্থাও বেশ খারাপ। ড্রেজার স্পাড, কাটার, কপ্পা, পাম্পসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ভেঙে গেছে। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি লাগানোয় এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। ড্রেজার ক্রয় চুক্তির শর্ত অনুয়ায়ী প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেনি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ লাগিয়ে এসব ড্রেজার বিআইডব্লিউটিএ-কে বুঝিয়ে দেয়া হয়। ড্রেজারের যে ডিজাইন ও স্পেসিপিকেশন টেন্ডারে চাওয়া হয়েছিল সরবরাহের সময় তা অনুসরণ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, এ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর সহযোগিতায় এ সুযোগ করে নেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি লাগিয়ে ড্রেজার সরবরাহে সহায়তার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ কোটি টাকা নিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। সরবরাহের পর তড়িঘড়ি ঠিকাদার কোম্পানির পুরো বিলও পরিশোধ করে দেয়া হয়। দ্রুত এ বিল একবারে পাইয়ে দিতেও বিনিময় নিয়েছেন প্রকৌশলী। বিনিময়ের পরিমাণ ১৩ কোটি টাকা বলে জানা গেছে। বিআইডব্লিউটিএ-ও এক ঠিকাদার অভিযোগ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঠিকাদার সংস্থার এ প্রকৌশলীর দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত প্রকৌশলী হলেন বিআইডব্লিউটিএ’র তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আইয়ুব আলী। ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘১০টি ড্রেজার প্রকল্পের আওতায়’ ২০১৪ সালে কোনো প্রকার টেস্ট, ট্রায়াল ছাড়াই ৮টি ড্রেজার বুঝে নেয়া হয়েছে। ড্রেজারগুলোর সঙ্গে স্পেয়ার পার্টস ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ নেয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা নেয়া হয়নি। এছাড়া ড্রেজারের ডিজাইন ও স্পেসিপিকেশনের শর্তও মানা হয়নি। এতে আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে সবগুলো ড্রেজার নষ্ট হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এ দুর্নীতি ও অনিময়ের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে আরো জানা গেছে, যে কোন ঠিকাদারি কাজের কার্যাদেশ নিতে প্রকৌশলী আইয়ুব আলীর ভূমিকা প্রধান ছিলো। ৫ শতাংশ হারে উৎকোচ দিতে হয়। দাবি পূরণ না হলে নানাভাবে ঠিকাদারদের হয়রানি করা হয় বলেও ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন ঠিকাদার। ঐ ঠিকাদার প্রধানমন্ত্রী বরাবরে পাঠানো অভিযোগে আরও বলেন, ‘১০ ড্রেজার প্রকল্পের আওতায় ৩টি সার্ভে ভ্যাসেল, ট্রাক বোট সংগ্রহে ডাকা টেন্ডারে তাকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। বর্তমান বাজার দরের চেয়ে ওই কাজ ১৫ কোটি টাকা বেশিতে প্রদান করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র হিসাব বিভাগের নথি অনুয়ায়ী, খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয় না করে, ড্রেজিং না করেও কাগজে-কলমে হিসাব দেখিয়ে বছরে ২৫ কোটি তুলে নিয়েছে এ তিনি। একাধিবার ড্রেজারের তেল চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত প্রকৌশলী আইয়ুব আলী বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল এ অভিযোগে, কিন্তু ম্যানেজ করে বেরিয়ে আসেন প্রকৌশলী আইয়ুব আলী। বিআইডব্লিটিএর সৎ কর্মকর্তারা দাবি করেন, এই দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আইয়ুব আলী কি ভাবে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চাঁদপুর, বরিশাল, সদর ঘাট নৌ-টার্মিনাল প্রকল্পটির প্রকল্পের দায়িত্ব পান। দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী এখানেও প্রকল্পের শুরুতেই দুর্নীতির আশ্রয় নেন। পাঠক আগামী সংখায় থাকছে আইয়ুব আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির সচিত্র প্রতিবেদন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আইয়ুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন। এ সব রিপোর্ট লিখে কিছু হবে না  আমার বিরুদ্ধে কোন খবর প্রকাশ হলে আপনাকে দেখে নেবো এবং আমার ছেলেপেলে ও প্রশাসন দিয়ে ধরে এনে সায়েস্তা করে দিবো বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তিনি গর্বের সাথে বলেন  বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্প থেকে আমি  বড় পত্রিকার সাংবাদিকদের বিদেশে ঘুরিয়ে নিয়ে এসেছি। সুতরাং আপনি যা লেখার লিখতে পারেন পত্রিকায়। এতে আমার কিছু যায় আসবে না।
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

বিআইডব্লিউটি-এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আইয়ুব আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির উপাখ্যান  : রয়েছেন বহাল তবিয়াতে

আপডেট সময় ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিআইডব্লিউটিএ ‘র  তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে চাকরির শুরু থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। সব সময় তিনি এই সব অভিযোগ থেকে পার পেয়ে যান কোন এক আধ্যাত্মিক  হাতের কারনে। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা, করেছেন গাড়ি, বাড়ি, ফ্লাট ও প্লট। সু’চতুর আইয়ুব আলী যখন যে চেয়ারম্যান আসে তাকে ম্যানেজ করে চলেন বলে অফিস পাড়ায় গুঞ্জন রয়েছে । আর যার মাধ্যমে  ভাগিয়ে নেন বড় বড় প্রকল্প। বিআইডব্লিউটিএ সুত্রে জানা যায়, নদী খননে ৩শ কোটি টাকায় কেনা বিদেশি ১১টি ড্রেজারের কারিগরি মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নদী খননসহ ও নিয়মিত পলি অপসারণে ২টি ড্রেজার প্রকল্পের আওতায়’ ২০১১ সালে ৩টি এবং ১০টি ড্রেজার প্রকল্পের আওতায়’ ২০১৪ সালে দুদফায় ৮টি খনন যন্ত্র কেনে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কেনার ৫ বছরের মধ্যেই এসব ড্রেজার কার্যক্ষমতা হারাতে বসেছে। তিনটি ড্রেজার অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অন্য খননযন্ত্রের অবস্থাও বেশ খারাপ। ড্রেজার স্পাড, কাটার, কপ্পা, পাম্পসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ভেঙে গেছে। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি লাগানোয় এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। ড্রেজার ক্রয় চুক্তির শর্ত অনুয়ায়ী প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেনি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ লাগিয়ে এসব ড্রেজার বিআইডব্লিউটিএ-কে বুঝিয়ে দেয়া হয়। ড্রেজারের যে ডিজাইন ও স্পেসিপিকেশন টেন্ডারে চাওয়া হয়েছিল সরবরাহের সময় তা অনুসরণ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, এ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর সহযোগিতায় এ সুযোগ করে নেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি লাগিয়ে ড্রেজার সরবরাহে সহায়তার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ কোটি টাকা নিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী। সরবরাহের পর তড়িঘড়ি ঠিকাদার কোম্পানির পুরো বিলও পরিশোধ করে দেয়া হয়। দ্রুত এ বিল একবারে পাইয়ে দিতেও বিনিময় নিয়েছেন প্রকৌশলী। বিনিময়ের পরিমাণ ১৩ কোটি টাকা বলে জানা গেছে। বিআইডব্লিউটিএ-ও এক ঠিকাদার অভিযোগ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঠিকাদার সংস্থার এ প্রকৌশলীর দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত প্রকৌশলী হলেন বিআইডব্লিউটিএ’র তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আইয়ুব আলী। ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘১০টি ড্রেজার প্রকল্পের আওতায়’ ২০১৪ সালে কোনো প্রকার টেস্ট, ট্রায়াল ছাড়াই ৮টি ড্রেজার বুঝে নেয়া হয়েছে। ড্রেজারগুলোর সঙ্গে স্পেয়ার পার্টস ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ নেয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা নেয়া হয়নি। এছাড়া ড্রেজারের ডিজাইন ও স্পেসিপিকেশনের শর্তও মানা হয়নি। এতে আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে সবগুলো ড্রেজার নষ্ট হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এ দুর্নীতি ও অনিময়ের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে আরো জানা গেছে, যে কোন ঠিকাদারি কাজের কার্যাদেশ নিতে প্রকৌশলী আইয়ুব আলীর ভূমিকা প্রধান ছিলো। ৫ শতাংশ হারে উৎকোচ দিতে হয়। দাবি পূরণ না হলে নানাভাবে ঠিকাদারদের হয়রানি করা হয় বলেও ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন ঠিকাদার। ঐ ঠিকাদার প্রধানমন্ত্রী বরাবরে পাঠানো অভিযোগে আরও বলেন, ‘১০ ড্রেজার প্রকল্পের আওতায় ৩টি সার্ভে ভ্যাসেল, ট্রাক বোট সংগ্রহে ডাকা টেন্ডারে তাকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। বর্তমান বাজার দরের চেয়ে ওই কাজ ১৫ কোটি টাকা বেশিতে প্রদান করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র হিসাব বিভাগের নথি অনুয়ায়ী, খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয় না করে, ড্রেজিং না করেও কাগজে-কলমে হিসাব দেখিয়ে বছরে ২৫ কোটি তুলে নিয়েছে এ তিনি। একাধিবার ড্রেজারের তেল চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত প্রকৌশলী আইয়ুব আলী বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল এ অভিযোগে, কিন্তু ম্যানেজ করে বেরিয়ে আসেন প্রকৌশলী আইয়ুব আলী। বিআইডব্লিটিএর সৎ কর্মকর্তারা দাবি করেন, এই দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আইয়ুব আলী কি ভাবে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চাঁদপুর, বরিশাল, সদর ঘাট নৌ-টার্মিনাল প্রকল্পটির প্রকল্পের দায়িত্ব পান। দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী এখানেও প্রকল্পের শুরুতেই দুর্নীতির আশ্রয় নেন। পাঠক আগামী সংখায় থাকছে আইয়ুব আলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির সচিত্র প্রতিবেদন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আইয়ুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন। এ সব রিপোর্ট লিখে কিছু হবে না  আমার বিরুদ্ধে কোন খবর প্রকাশ হলে আপনাকে দেখে নেবো এবং আমার ছেলেপেলে ও প্রশাসন দিয়ে ধরে এনে সায়েস্তা করে দিবো বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তিনি গর্বের সাথে বলেন  বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্প থেকে আমি  বড় পত্রিকার সাংবাদিকদের বিদেশে ঘুরিয়ে নিয়ে এসেছি। সুতরাং আপনি যা লেখার লিখতে পারেন পত্রিকায়। এতে আমার কিছু যায় আসবে না।