সিনিয়র রিপোর্টার
শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে নিয়ে সোমবার (১২ আগস্ট) নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, অনেক কথার মধ্যে অনেক কথা চলে আসে। যদি আমি এমন কোনো কথা বলে থাকি, সেটা ভুল বুঝেছেন, সেটার জন্য আমি দুঃখিত।
এর আগে, সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, দয়া করে আপনারা দেশকে অরাজকতার মধ্যে ঠেলবেন না, ইনক্লুডিং সদ্য বিদায় হওয়া পার্টি (আওয়ামী লীগ)। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপনাদের সাহায্য করবো। আপনারা পার্টি গোছান উইথ নিউ ফেইস (নতুন মুখ নিয়ে), উইথ নিউ অঙ্গীকার এবং আশা করি উইথ থ্রু পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট (রাজনৈতিক আইনের মধ্য দিয়ে)।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে পিলখানার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজিবি সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি এখানে (পিলখানা) আসার সময়ও দেখলাম পুলিশের সঙ্গে ছাত্ররা কাজ করছে। পুলিশকে যারা দানব বানিয়েছে, তাদের অবশ্যই বিচার হবে। একটু সবুর করেন। সরকারি অ্যাকশন নিতে গেলে অনেক প্রসেস আছে। সুতরাং ধৈর্য ধরতে হবে।
পুলিশের যোগদান সম্পর্কে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সবাই যোগ দিচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বলতে পারব কয়জন আসছে, কয়জন আসেনি। আর আপনারা তো দেখছেন পুলিশ আমার সঙ্গে আছে। আমি ছাত্রদের উদ্দেশে বলব, তোমাদের আন্দোলন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এই আন্দোলনের তো ইমেজ আছে। পুলিশ খুবই অনুতপ্ত।
অস্ত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) বলেন, যারা অস্ত্র ছিনতাই বা লুট করেছে তাদেরকে ফেরত দিতে বলেছি। যদি জমা না দিয়ে ধরা পড়েন তাহলে দুই রকমের শাস্তি পাবেন। নিষিদ্ধ অস্ত্র ছিনতাই ও নিষিদ্ধ অস্ত্র পাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন। সুতরাং নিজেরা ভয়ে আসতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে জমা দেন।
ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে সরকারি নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই পুলিশ কমিশন তৈরির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। কমিশন হয়ে গেলে পুলিশ সেই নিয়মে চলবে। পুলিশ আমাকে বলেছে, এই ইউনিফর্ম পরে তারা একদিনও বের হতে চাই না। আমি বলেছি, এটার জন্য তো সময় লাগবে। যারা ছাত্র, কোটার আন্দোলনের মধ্যে ছিলেন তাদের বলছি, আপনারা ডিজাইন, ব্যাচ নিয়ে আসেন। আমরা যতো দ্রুত সম্ভব ইউনিফর্ম চেঞ্জ করতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সব কিছুর একটা প্রসেস আছে। আমি লিস্ট করছি। যাদের অন্যায়ভাবে বের করা হয়েছে, আবার যারা এরমধ্যেই ছিল না। আপনারা যাদের কথা বলছেন সেটা আমরা দেখবো। তবে আমরা খুঁজছি, বের করার চেষ্টা করছি হুকুমের আসামিদের। যাদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের সবার লিস্ট আমাদের কাছে আছে। ২/১ দিনের মধ্যে আপনারা অ্যাকশন দেখবেন। আমি তো এটার মালিক না। চাইলেই সাইন করতে পারি না। দুটো ধাপ পার হতে হবে। আজ বা কালকের মধ্যে আপনারা খবর জেনে যাবেন। মাঠের কাজ প্রায় শেষ।
সাখাওয়াত বলেন, পুলিশরা ভবিষ্যতে যেন মানবিক পুলিশ হয় সে জন্য আমরা পুলিশ কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা করছি। পুলিশ সদস্যরাও বলেছেন, পুলিশ কমিশনের অধীনে তারা থাকতে চাই। রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে চাই না।
১৫ আগস্ট ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা এখনই আমি বলতে পারব না। আজ বিকালে আমরা বসব, সেখানে এটা নিয়ে আলোচনা হবে। যেটা হয় আমরা নির্ধারণ করব। সেদিন প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কেউ যাতে কোনো ধরনের গণ্ডগোল করতে না পারে।