ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নীরবে সরে গেলেন চার ব্যাংকের চেয়ারম্যান

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৪:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
  • 96

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকার পরিবর্তনের পর বদলে যাচ্ছে বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানও। বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের আগেই অনেকে পদ ছেড়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ রাজনৈতিক রোষানলের ভয়ে সরে যাচ্ছেন দায়িত্ব থেকে। এরই মধ্যে নীরবে তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়ে গেছে। আরো কয়েকটি ব্যাংকে একই ধরনের পরিবর্তনের আলোচনা চলছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, আগে একসময় ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে পদত্যাগ করে অন্যদের সুযোগ করে দিতেন। ব্যাংক চেয়ারম্যানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে তিনবার ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করা হয়। সর্বশেষ সংশোধিত আইন অনুযায়ী, একজন চেয়ারম্যান টানা তিন মেয়াদে সর্বোচ্চ নয় বছর দায়িত্ব পালন করতে পারেন। ব্যাংক চেয়ারম্যানরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে নিজেদের স্বার্থে এ বিধান চালু করেন। ফলে বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন সরকার-ঘনিষ্ঠরা।

কিন্তু ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকার-ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালীরা চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে শুরু করেন। সর্বশেষ বুধবার (২১ আগস্ট) বেসরকারি খাতের শরিয়াহভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগ করেন। তার জায়গায় নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল আজিজ। আগামী এক বছরের জন্য তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। ১৯৯৯ সালের ১১ মে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটিতে একটানা ২৫ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি।

গত রবিবার (১৮ আগস্ট) আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন সেলিম রহমান। তিনি কেডিএস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা খলিলুর রহমানের ছেলে। তার আগে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন আবদুস সামাদ, তিনি এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের (এস আলম) ভাই। 

সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশের পটপরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপের ব্যাংকগুলো নিয়ে নানা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রেক্ষাপটে নিজেই পদ ছেড়ে দিয়েছেন আবদুস সামাদ। তবে ব্যাংকটি এখনো এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম জাকারিয়া ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ওসমান আলী এখনো ব্যাংকটির পরিচালক আছেন। আবার ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুল হামিদ মিয়াও স্বতন্ত্র পরিচালক।

এদিকে সরকার পরিবর্তনের পর শেয়ারধারীদের বিক্ষোভের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান পদেও। নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন রোকসানা জামান চৌধুরী, তিনি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বোন। এর আগে চেয়ারম্যান ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুকমিলা জামান।

ইউসিবির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বাবা ও আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী। শুরু থেকে ব্যাংকটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম এ হাসেম। তারা বিভিন্ন সময় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত উভয়ের পরিবারের সদস্যরাই ব্যাংকটিতে যুক্ত ছিলেন ও নেতৃত্ব দেন। ২০১৭ সালে পারটেক্স গ্রুপের সদস্যদের ইউসিবি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন রুকমিলা জামান। তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় ব্যাংকটি মূলত সাইফুজ্জামান চৌধুরীই পরিচালনা করে আসছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকে বুধবার পাঠানো এক চিঠিতে ইউসিবি ব্যাংকের কিছু শেয়ারধারী জানিয়েছেন, রুকমিলা জামান ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেও সাইফুজ্জামান চৌধুরী কার্যত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন এবং তার ‘স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের কারণে’ ব্যাংকটি দেউলিয়া হওয়ার পথে। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে এক হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, যা এই ‘ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা লুট করে পরিশোধ করা হয়েছে’।

জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদে প্রায় ১৫টি ব্যাংক অনুমোদন দেওয়া হয়। যার সবগুলোই রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া হয়। এ ছাড়া তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে প্রায় সব ব্যাংকই আওয়ামীপন্থী ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। যেসব ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পদধারী নেতা ও সাবেক এমপিরা রয়েছেন, তারা পটপরিবর্তনের পর পদ ছাড়ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করেছে। পুনর্গঠিত পর্ষদের দায়িত্ব পেয়েছেন ব্যাংকটির পুরোনো উদ্যোক্তা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। ইসলামী ব্যাংক পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বতন্ত্র পরিচালকদের কাছে।

পদত্যাগ করেছেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। বেসরকারি আইএফআইসি ব্যাংক এখন সরকারের ৩২ শতাংশ শেয়ার থাকার বিষয়টি জোরেশোরে প্রচার করছে। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, গত ১০ বছরের বেশি সময় ব্যাংকটি এককভাবে চালিয়েছেন তিনি। সরকার পরিবর্তনের পর খেলাপি হওয়ার কারণে ব্যাংকটির পরিচালক থেকে বাদ পড়েছেন তার ছেলে সায়ান এফ রহমান। এদিকে এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা কমার্স ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার।

জানা গেছে, আত্মগোপন রয়েছেন বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী পরিচালকেরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইনে পর্ষদ সভা করার সুযোগ রাখায় তারা আত্মগোপনে থেকেও ব্যাংক পরিচালনা করছেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

নীরবে সরে গেলেন চার ব্যাংকের চেয়ারম্যান

আপডেট সময় ০৪:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকার পরিবর্তনের পর বদলে যাচ্ছে বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানও। বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের আগেই অনেকে পদ ছেড়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ রাজনৈতিক রোষানলের ভয়ে সরে যাচ্ছেন দায়িত্ব থেকে। এরই মধ্যে নীরবে তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়ে গেছে। আরো কয়েকটি ব্যাংকে একই ধরনের পরিবর্তনের আলোচনা চলছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, আগে একসময় ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে পদত্যাগ করে অন্যদের সুযোগ করে দিতেন। ব্যাংক চেয়ারম্যানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে তিনবার ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করা হয়। সর্বশেষ সংশোধিত আইন অনুযায়ী, একজন চেয়ারম্যান টানা তিন মেয়াদে সর্বোচ্চ নয় বছর দায়িত্ব পালন করতে পারেন। ব্যাংক চেয়ারম্যানরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে নিজেদের স্বার্থে এ বিধান চালু করেন। ফলে বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন সরকার-ঘনিষ্ঠরা।

কিন্তু ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে সরকার-ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালীরা চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে শুরু করেন। সর্বশেষ বুধবার (২১ আগস্ট) বেসরকারি খাতের শরিয়াহভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগ করেন। তার জায়গায় নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল আজিজ। আগামী এক বছরের জন্য তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। ১৯৯৯ সালের ১১ মে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটিতে একটানা ২৫ বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি।

গত রবিবার (১৮ আগস্ট) আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন সেলিম রহমান। তিনি কেডিএস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা খলিলুর রহমানের ছেলে। তার আগে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন আবদুস সামাদ, তিনি এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের (এস আলম) ভাই। 

সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশের পটপরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপের ব্যাংকগুলো নিয়ে নানা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রেক্ষাপটে নিজেই পদ ছেড়ে দিয়েছেন আবদুস সামাদ। তবে ব্যাংকটি এখনো এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম জাকারিয়া ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ওসমান আলী এখনো ব্যাংকটির পরিচালক আছেন। আবার ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুল হামিদ মিয়াও স্বতন্ত্র পরিচালক।

এদিকে সরকার পরিবর্তনের পর শেয়ারধারীদের বিক্ষোভের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান পদেও। নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন রোকসানা জামান চৌধুরী, তিনি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বোন। এর আগে চেয়ারম্যান ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরীর স্ত্রী রুকমিলা জামান।

ইউসিবির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বাবা ও আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী। শুরু থেকে ব্যাংকটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এম এ হাসেম। তারা বিভিন্ন সময় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত উভয়ের পরিবারের সদস্যরাই ব্যাংকটিতে যুক্ত ছিলেন ও নেতৃত্ব দেন। ২০১৭ সালে পারটেক্স গ্রুপের সদস্যদের ইউসিবি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন রুকমিলা জামান। তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় ব্যাংকটি মূলত সাইফুজ্জামান চৌধুরীই পরিচালনা করে আসছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকে বুধবার পাঠানো এক চিঠিতে ইউসিবি ব্যাংকের কিছু শেয়ারধারী জানিয়েছেন, রুকমিলা জামান ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেও সাইফুজ্জামান চৌধুরী কার্যত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন এবং তার ‘স্বেচ্ছাচারিতা ও লুটপাটের কারণে’ ব্যাংকটি দেউলিয়া হওয়ার পথে। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে এক হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে, যা এই ‘ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা লুট করে পরিশোধ করা হয়েছে’।

জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদে প্রায় ১৫টি ব্যাংক অনুমোদন দেওয়া হয়। যার সবগুলোই রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া হয়। এ ছাড়া তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে প্রায় সব ব্যাংকই আওয়ামীপন্থী ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। যেসব ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পদধারী নেতা ও সাবেক এমপিরা রয়েছেন, তারা পটপরিবর্তনের পর পদ ছাড়ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে ইসলামী ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করেছে। পুনর্গঠিত পর্ষদের দায়িত্ব পেয়েছেন ব্যাংকটির পুরোনো উদ্যোক্তা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। ইসলামী ব্যাংক পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বতন্ত্র পরিচালকদের কাছে।

পদত্যাগ করেছেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। বেসরকারি আইএফআইসি ব্যাংক এখন সরকারের ৩২ শতাংশ শেয়ার থাকার বিষয়টি জোরেশোরে প্রচার করছে। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, গত ১০ বছরের বেশি সময় ব্যাংকটি এককভাবে চালিয়েছেন তিনি। সরকার পরিবর্তনের পর খেলাপি হওয়ার কারণে ব্যাংকটির পরিচালক থেকে বাদ পড়েছেন তার ছেলে সায়ান এফ রহমান। এদিকে এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা কমার্স ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার।

জানা গেছে, আত্মগোপন রয়েছেন বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী পরিচালকেরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইনে পর্ষদ সভা করার সুযোগ রাখায় তারা আত্মগোপনে থেকেও ব্যাংক পরিচালনা করছেন।