অনলাইন ডেস্ক : বিডিআর বিদ্রোহ বিস্ফোরক দ্রব্য মামলার ১৭ বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটরের নিয়োগ আদেশ বাতিল করেছে সরকার। আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগের এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। আদেশে বলা হয়, লালবাগ (ডিএমপি) থানার মামলা নং-৬৫, তারিখ: ২৮/০২/২০০৯ হতে উদ্ভূত বিডিআর বিদ্রোহ বিস্ফোরক দ্রব্য মামলার ১৭ (সতেরো) জন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটরের নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হলো।
নিয়োগ বাতিল হওয়া এসব ১৭ স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর হলেন- মোশাররফ হোসেন কাজল, শেখ বাহারুল ইসলাম, গাজী জিল্লুর রহমান, আব্দুল জলিল আফ্রাদ কবির, এ কে এম তৌহিদুর রহমান, মোকতার হোসেন, আমিনুর রহমান খান, জেবুন্নেছা আক্তার খাতুন (মুন্নী), মনজুর মো. শাহনেওয়াজ, লাইজু ইয়াসমিন, লাকী আক্তার ফ্লোরা, মো. মাসুদ রানা, মো. শাহজাহান, শাহানা বেগম, মো. ফিরোজ আহমেদ, মো. ওমর ফারুক এবং মো. হাবিবুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদরদপ্তরের সংঘটিত বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।
এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুইটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছে ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের। হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ৮৫০ জনের বিচার কাজ শেষ হয়েছে। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে এবং বিভিন্ন মেয়াদে ২২৮ জনকে সাজা প্রদান করা হয়। এছাড়া ২৮৩ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
হাই কোর্টের রায়ের পূর্বে ১৫ জনসহ মোট ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাই কোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ২০১০ সালে ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম এক প্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ফলে এ মামলার বিচার ঝুলে যায়। তবে শাসন ক্ষমতার পরিবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি উঠে।