সিনিয়র রিপোর্টার
ঢাকা-১৩ আসন এর সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, পাবনা-৫ আসন এর সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ নুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কালিয়াকৈর, গাজীপুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা-১৩ আসন এর সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসন হতে সংসদ সদস্য মনোনীত হওয়ার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, সাদেক খান মুরগি মার্কেট, সাদেক খান শুটকি মার্কেট, সাদেক খান ইট মার্কেট, সাদেক খান বালি মার্কেট, সাদেক খান বস্তি ও পেট্রোল পাম্প নামীয় সকল স্থাপনা হিন্দু সম্পত্তি দখল করে তৈরি করেছেন।
তার দাখিলকৃত নির্বাচনী হলফনামায় তার নামে ১,৪১,০০,০০০/- টাকা অকৃষি জমি, যৌথ নামে ১,৩১,৫২,০০০/- টাকার জমি যাতে তিনি ৫০% অংশীদার, ১১,৯০,০০০/- টাকার এপার্টমেন্ট/বাড়ি, ১০,৫০,০০০/- টাকার পরিবহন ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে ৩৯,৫০,০০০/- টাকার গাড়ি, ১,১২,০৩,০০০/- মূল্যের জমি ও অন্যান্য সম্পদ রয়েছে; তার দাখিলকৃত হলফনামায় ৫২,৬০,০০,০০০/- টাকা ও জমিসহ ২ টি একক বাড়ি ও ১ টি যৌথ বাড়ি যার মূল্যে ৫.৫০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া তার নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে মর্মে সোর্স মূলে জানা যায়। নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে এবং তার পরিবারবর্গের নামে তার নিকট আত্মীয়দের নামে আরও অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত সম্পদ রয়েছে মর্মে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
পাবনা-৫ আসন এর সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তথ্যানুসন্ধানকালে তার দাখিলকৃত হলফনামা পর্যালোচনান্তে জানা যায়, তিনি পরপর ৩ বারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন তার সম্পদ ছিলো ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা পরবর্তীতে ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সম্পদ ছিলো ৭,৫৬,১২,৫৬৮/- টাকা যারমধ্যে অন্যতম হলো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩,৬২,৯৩,৮৮৩/- টাকা, শেয়ার ক্রয় ৪,৯০,০০০/- টাকা, বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ৩ কোটি টাকা বাস-ট্রাক ও মোটরগাড়ী ক্রয় ৭৭,৭৮,৬৮৫/- টাকা। এছাড়া নিজ নামে ৮,০৬,৮৫,৫৮২/- টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। যারমধ্যে ১৮.৭৬৪০ একর কৃষি জমি, যার মূল্যে ৩,০২,২৯,৩৪৯/- টাকা, ধানমন্ডিতে ০১ টি ফ্ল্যাট মৎস্য খামারসহ মেসার্স গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স লিঃ নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
এছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত-আয় বর্হিভূত সম্পদ রয়েছে মর্মে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুনাজ আহমেদ নুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কালিয়াকৈর, গাজীপুরের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ইউজিসি থেকে বিভাগ অনুমোদনের আগেই ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ডাটা ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যানালাইটিকস প্রোগ্রাম নামক বিভাগ চালু হওয়ার পূর্বেই উক্ত প্রতিষ্ঠানে ডাটা ল্যাব স্থাপন করা হয়। এতে খরচ হয় ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৬৪ হাজার ২০২ টাকা।
জানা যায়, ‘জেভি অব বিএমআইটি সলিউশনস লিমিটেড’-কে কার্যাদেশ দেওয়ার অভিপ্রায় নিয়ে ‘আই থিসিক্সটি বাংলাদেশ লিমিটেড’-কে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। একটি নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করার আগে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে সর্বোত্তম এবং সবচেয়ে অর্থনৈতিক উপায় কি-না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামক প্রতিষ্ঠানে ডাটা সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পে প্রকল্প সঠিকভাবে প্রাক মূল্যায়ন করা হয়নি মর্মে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।