ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনুপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাজে যোগ দিতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 91

সিনিয়র রিপোর্টার

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য এখনো কাজে যোগ দেননি তারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।  তাদের আর যোগ দিতে দেওয়া হবে না। 

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুরের সফীপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডার কর্মকর্তা এবং ২৫তম ব্যাচ (পুরুষ) রিক্রুট সিপাহী মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়- বাংলাদেশ পুলিশের ১৮৭ জন সদস্য এখনো কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পট পরিবর্তনের পর ১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা কর্মস্থলে যোগাযোগ না করে অনুপস্থিত রয়েছেন।

অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ডিআইজি এক জন, অতিরিক্ত ডিআইজি সাত জন, পুলিশ সুপার দুই জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এক জন, সহকারী পুলিশ সুপার পাঁচ জন, পুলিশ পরিদর্শক পাঁচ জন, এসআই ও সার্জেন্ট ১৪ জন, এএসআই নয় জন, নায়েক সাত জন এবং কনস্টেবল ১৩৬ জন।

১৮৭ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে ছুটিতে অতিবাস ৯৬ জন, কর্মস্থলে গরহাজির ৪৯ জন, স্বেচ্ছায় চাকরি ইস্তফা দিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত তিন জন এবং অন্যান্য কারণে ৩৯ জন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সংস্কারের মাধ্যমে একটি দক্ষ, সুসংগঠিত, পেশাদার ও সময়োপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ লক্ষ্যে যা যা করণীয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তা তা করা হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশের প্রতিটি জরুরি মুহূর্তে আনসার বাহিনীর সদস্যরা গভীর দেশপ্রেম নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বিধানসহ কূটনৈতিক এলাকার সুরক্ষায় এ বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থানা, ট্র্যাফিক, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সুরক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। 

তিনি বলেন, বিশেষ করে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ডিএমপির থানাগুলোর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন এবং হযরত শাহাজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর স্বল্পতার মাঝেও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাতে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাতির জরুরি প্রয়োজনে সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য বাহিনীটির সব সদস্যকে প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে থাকা স্বেচ্ছাসেবী ভিডিপি সদস্যরাও দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামে গ্রামে যে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট দেখা দিয়েছিল, ভিডিপি সদস্যরা তা নিরসনে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বলেন, যারা মন্দির, গির্জা, চার্চে হামলা চালিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল, তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভিডিপি সদস্যরা। তারা ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে পাহারা বসিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি রক্ষায় অবদান রেখেছিলেন। উপদেষ্টা ভবিষ্যতেও ভিডিপি সদস্যরা তারুণ্য নির্ভর স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় সুসংগঠিত হয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তায় আরো বেশি অবদান রাখবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসান জানান, কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।

পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সালাম গ্রহণ করেন এবং কৃতি প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

অনুপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাজে যোগ দিতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৫:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য এখনো কাজে যোগ দেননি তারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।  তাদের আর যোগ দিতে দেওয়া হবে না। 

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুরের সফীপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪০তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডার কর্মকর্তা এবং ২৫তম ব্যাচ (পুরুষ) রিক্রুট সিপাহী মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়- বাংলাদেশ পুলিশের ১৮৭ জন সদস্য এখনো কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পট পরিবর্তনের পর ১ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা কর্মস্থলে যোগাযোগ না করে অনুপস্থিত রয়েছেন।

অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ডিআইজি এক জন, অতিরিক্ত ডিআইজি সাত জন, পুলিশ সুপার দুই জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এক জন, সহকারী পুলিশ সুপার পাঁচ জন, পুলিশ পরিদর্শক পাঁচ জন, এসআই ও সার্জেন্ট ১৪ জন, এএসআই নয় জন, নায়েক সাত জন এবং কনস্টেবল ১৩৬ জন।

১৮৭ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে ছুটিতে অতিবাস ৯৬ জন, কর্মস্থলে গরহাজির ৪৯ জন, স্বেচ্ছায় চাকরি ইস্তফা দিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত তিন জন এবং অন্যান্য কারণে ৩৯ জন কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সংস্কারের মাধ্যমে একটি দক্ষ, সুসংগঠিত, পেশাদার ও সময়োপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ লক্ষ্যে যা যা করণীয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তা তা করা হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশের প্রতিটি জরুরি মুহূর্তে আনসার বাহিনীর সদস্যরা গভীর দেশপ্রেম নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বিধানসহ কূটনৈতিক এলাকার সুরক্ষায় এ বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর থানা, ট্র্যাফিক, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সুরক্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। 

তিনি বলেন, বিশেষ করে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ডিএমপির থানাগুলোর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন এবং হযরত শাহাজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন। 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর স্বল্পতার মাঝেও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনাতে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাতির জরুরি প্রয়োজনে সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য বাহিনীটির সব সদস্যকে প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে থাকা স্বেচ্ছাসেবী ভিডিপি সদস্যরাও দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামে গ্রামে যে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট দেখা দিয়েছিল, ভিডিপি সদস্যরা তা নিরসনে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বলেন, যারা মন্দির, গির্জা, চার্চে হামলা চালিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল, তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ভিডিপি সদস্যরা। তারা ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে পাহারা বসিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি রক্ষায় অবদান রেখেছিলেন। উপদেষ্টা ভবিষ্যতেও ভিডিপি সদস্যরা তারুণ্য নির্ভর স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় সুসংগঠিত হয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তায় আরো বেশি অবদান রাখবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসান জানান, কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।

পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সালাম গ্রহণ করেন এবং কৃতি প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন।