অনলাইন ডেস্ক : বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বর্বরোচিত বোমা হামলা দিবস আজ। দীর্ঘ ২২ বছরেও বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের নির্বাচনী জনসভায় বোমা হামলার বিচার হয়নি। দিবসটি পালনে জেলা আওয়ামী লীগ শোকসভা, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছেন। ২০০১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার খলিলুর রহমান কলেজ মাঠে বর্তমান বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের ২০০১ সালের নির্বাচনী জনসভায় এ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
সেদিন শেখ হেলাল উদ্দিন জনসভাস্থলে যাওয়ার জন্য কলেজ গেটে ঢুকতেই গেটের পাশে পুতে রাখা শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে নয়জন নিহত ও শেখ হেলালসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। বোমার আঘাতে নিহত ও গুরুতর আহতদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ছিন্নবিছিন্ন হয়ে যায়। সেই বোমার স্প্রিন্টাল এখনও শরীরে বহন করে বেড়াচ্ছেন অনেকে।
ঘটনার পরের দিন ২৪ সেপ্টেম্বর মোল্লাহাট থানায় তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী জিয়াউল ইসলাম পান্না বাদী হয়ে ১৬৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। দুই দফা তদন্ত শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট পুলিশ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন শিকদার বাদশা মিয়া, জিল্লুর রহমান, মুফতি আব্দুল হান্নান, আনিছুজ্জামান, আবু তালেব ও হাফেজ মো. রকিব হাসান। পরবর্তীতে আবু তালেব ও হাফেজ রকিব হাসানের মৃত্যু হলে তাদের নাম বাদ দিয়ে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর বাকি চারজনের বিরুদ্ধে তৎকালীন সিআইডি যশোর জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম আদালতে সম্পূরক চার্জশিট জমা দেন। মামলা দুটি বাগেরহাটের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন আছে। মামলার চার্জ গঠনের সময় রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য আবেদন করলে এ বিষয়ে শুনানি হয়ে আদেশের জন্য ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর দিন ধার্য ছিল। এভাবে কেটে গেছে দীর্ঘ ২২ বছর।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ভুঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন বলেন, শেখ হেলাল উদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশে তার নির্বাচনী জনসভায় হামলা করা হয়। এই বোমা হামলার জন্য ‘৭১-এর স্বাধীনতা বিরোধী, ‘৭৫-এর খুনি চক্র ও মৌলবাদীদের দায়ী করে তিনি এ বোমা হামলার দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বাগেরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের আমলে তদন্ত হওয়ায় চার্জশিটে নানা ত্রুটিবিচ্যুতি থাকায় পুনঃতদন্ত চাওয়া হয়েছে। পুনঃতদন্তের বিষয় শুনানি শেষে বর্তমানে আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে। স্পর্শকাতর এ মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে ও এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও আশা করেছেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১।