অনলাইন ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকদের সাথে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। তারপর থেকেই পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে দেশটির প্রদেশ থেকে প্রদেশে। শনিবার পাঞ্জাবের লাহোরেও বিক্ষোভ দেখা দেয়। ফলে সেখানেও সেনা মোতায়েন করতে বাধ্য হয় স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার ইসলামাবাদের পরিস্থিতিও উত্তপ্ত বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। রাওয়ালপিন্ডিতেও উত্তেজনা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখছে শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন সরকার। বড় বড় সড়কগুলোও কনটেইনার দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার ইসলামাবাদের বিভিন্ন জায়গায় ইমরান খানের দল পিটিআইর সমর্থকরা জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে জারি থাকা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেন তারা। তাদের লক্ষ্য ছিল ডি-চকে বিক্ষোভ করার। কিন্তু পুলিশের বাধায় সেই বিক্ষোভ পণ্ড হয়ে যায়। ওই সময় বিক্ষোভের জন্য জড়ো হওয়ার পিটিআই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে।
এদিকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়াতেও সেনাবাহিনীর সাথে উগ্রপন্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, উগ্রবাদীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। আর অপর পাঁচজন হলো উগ্রবাদী বাহিনীর সদস্য। খাইবার পাখতুনখাওয়ার নর্থ ওয়াজিরিস্তানের স্পিনওয়াম এলাকায় ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শনিবার দেশটির সামরিক মিডিয়া শাখা আইএসপিআর পৃথক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৪ ও ৫ অক্টোবর রাতে উত্তর ওয়াজিরিস্তানের স্পিনওয়াম এলাকায় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলোর ঘটনা ঘটে। এতে ৬ জন টিটিপি সন্ত্রাসী নিহত হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অভিযানের সময় ৬ জন বীর সেনা শহিদ হয়েছেন। যাদের মধ্যে ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ আলী শওকত। যিনি ওই অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। শহিদ হওয়া বাকি পাঁচ সেনা হলেন- ল্যান্স নায়েক মুহাম্মদ উল্লাহ, ল্যান্স নায়েক আখতার জামান, ল্যান্স নায়েক শাহিদ উল্লাহ, ল্যান্স নায়েক ইউসুফ আলী এবং সিপাহী জামিল আহমেদ।
আরেক বিবৃতিতে পাকিস্তান আইএসপিআর জানিয়েছে, স্বাতের চারবাগ এলাকার একটি যৌথ গোয়েন্দা ভিত্তিক অভিযানে দুই জন টিটিপি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ছিলেন টিটিপির প্রধান নেতা আতা উল্লাহ ওরফে মেহরান।
আতা উল্লাহ স্বাত এলাকায় গত ২২ সেপ্টেম্বর বিদেশী প্রতিনিধিদের বহনকারী পুলিশের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে চালানো বোমা হামলায় জড়িত ছিলেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনী বর্তমানে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং এরকম সাহসী সৈনিকদের আত্মত্যাগ সন্ত্রাস নির্মূলের প্রতি তাদের সংকল্প আরও জোরদার করবে।
উল্লেখ্য, চলমান হামলাগুলোতে জড়িত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির নাম টিটিপি উল্লেখ করা হলেও, গত জুলাই মাসে পাকিস্তান সরকার টিটিপিকে ‘ফিতনা আল খারিজ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং সন্ত্রাসী হামলার ক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠানকে ‘খারিজি’ শব্দটি ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে।