ঢাকা , রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয় মাসে সড়কে ঝরেছে ৫৫৯৮ প্রাণ, রোড সেফটির প্রতিবেদন

সিনিয়র রিপোর্টার

চলতি বছরের নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে পাঁচ হাজার ৪৮৫টি। এতে নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৯৮ জন এবং আহত হয়েছেন নয় হাজার ৬০১ জন।

রবিবার (২০ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে নারী ৬৭৭ জন ও শিশু ৭২৯ জন। দুই হাজার ৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত এক হাজার ৯২৪ জন; যা মোট নিহতের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন‘ যা মোট নিহতের ২০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮৮ জন, অর্থাৎ ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। 

এই সময়ে ৮৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত, ১২৫ জন আহত এবং ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হয়েছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ১০ শতাংশ, প্রাণহানি ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১২ দশমিক ৬৮ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ছয় দশমিক ৪৫ শতাংশ, প্রাণহানি ছয় দশমিক ১০ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা পাঁচ দশমিক ৮১ শতাংশ, প্রাণহানি পাঁচ দশমিক ৩৪ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রাণহানি ১০ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা আট দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রাণহানি সাত দশমিক ০৭ শতাংশ ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এক হাজার ১৭২টি দুর্ঘটনায় এক হাজার ৩৬৪ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩১৯টি দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল ও তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোয় ঘটছে এসব দুর্ঘটনা। এ ছাড়া দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়া, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণেও।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১২ দফা সুপারিশও করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এগুলো হলো- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে, চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে, পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে, সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব করতে হবে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

হাজারীবাগে ভবন নির্মাণে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ১

নয় মাসে সড়কে ঝরেছে ৫৫৯৮ প্রাণ, রোড সেফটির প্রতিবেদন

আপডেট সময় ৩ ঘন্টা আগে

সিনিয়র রিপোর্টার

চলতি বছরের নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে পাঁচ হাজার ৪৮৫টি। এতে নিহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৯৮ জন এবং আহত হয়েছেন নয় হাজার ৬০১ জন।

রবিবার (২০ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে নারী ৬৭৭ জন ও শিশু ৭২৯ জন। দুই হাজার ৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত এক হাজার ৯২৪ জন; যা মোট নিহতের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭ দশমিক ২১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন‘ যা মোট নিহতের ২০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮৮ জন, অর্থাৎ ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। 

এই সময়ে ৮৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত, ১২৫ জন আহত এবং ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হয়েছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ১০ শতাংশ, প্রাণহানি ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১২ দশমিক ৬৮ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ছয় দশমিক ৪৫ শতাংশ, প্রাণহানি ছয় দশমিক ১০ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা পাঁচ দশমিক ৮১ শতাংশ, প্রাণহানি পাঁচ দশমিক ৩৪ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রাণহানি ১০ দশমিক ০৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা আট দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রাণহানি সাত দশমিক ০৭ শতাংশ ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এক হাজার ১৭২টি দুর্ঘটনায় এক হাজার ৩৬৪ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩১৯টি দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল ও তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোয় ঘটছে এসব দুর্ঘটনা। এ ছাড়া দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়া, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণেও।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১২ দফা সুপারিশও করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এগুলো হলো- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে, চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে, পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে, সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব করতে হবে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।