সিনিয়র রিপোর্টার
পল্লী বিদ্যুতের ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্ট্যান্ড রিলিজ করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)। এসব কর্মকর্তা জেলায় জেলায় বিদ্যুৎ বন্ধে ক্ষমা চাওয়াসহ বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চাকরিচ্যুত ৩১ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
রবিবার (২০ অক্টোবর) বোর্ডের এক অফিস আদেশে এ স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। এর আগে, শনিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা চট্টগ্রাম পবিস ১ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে রাজশাহী জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়, নরসিংদী পবিস ১ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুল্লাহ আল হাদীকে চট্টগ্রাম জোনে, নরসিংদী পবিস ২ এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ভুইয়াঁকে কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলের কার্যালয়ে, ঢাকা পবিস ১ এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার তামজিদুল ইসলামকে রংপুর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে, নওগাঁ পবিস ২ এর জেনারেল ম্যানেজার শাহ মো. রাজ্জাকুর রহমানকে চট্টগ্রাম জোনে ও গাজীপুর পবিস ১ এর ওয়ারিং পরিদর্শক শেখ রহমত উল্লাহ নাজিরকে নীলফামারী নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
এর আগে, বুধবার (১৬ অক্টোবর) ২০ জন জিএম, ডিজিএম ও এজিএমের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপ ছাড়াও নির্দেশনা অবজ্ঞাসহ কয়েকটি অভিযোগ এনে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এরই মধ্যে ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
এসবের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি চাকরির অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার না করলে সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী পল্লী বিদ্যুতের সমন্বয়করা। সেই সঙ্গে আরইরিব চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিও জানান তারা।
একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জেলায় ৬১টি সমিতিতে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবাদ জানায় সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে লাখ লাখ গ্রাহক। তবে বিকালের দিকে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক প্রকৌশলী রাজন কুমার দাস (এজিএম), প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া (ডিজিএম) দীপক কুমার সিংহ (ডিজিএম)সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহ মামলাও দেওয়া হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, সন্ধ্যায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমস্যা সমাধান এবং আটকদের ছেড়ে দেওয়া আশ্বাস দিলে রবিবার পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর স্ট্যান্ড রিলিজ পাওয়া এই ছয় জন শনিবার (১৯ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখায় ক্ষমা চাওয়াসহ সবার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।