ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করবো না : প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক  

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। পরিবারে মতভেদ থাকবে, বাগ্‌বিতণ্ডা হবে, কিন্তু আমরা কেউ কারও শত্রু হবো না। কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করবো না। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কাউকে ধর্মের কারণে শত্রু মনে করবো না। আমরা সবাই সমান। কেউ কারও ওপরে না এবং কেউ কারও নিচে না এই ধারণা আমরা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ।

বাংলাদেশে সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনীতি সুসংহত করণে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে। তাই, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

তরুণদের সৃজনশীলতার বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করে করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তরুণ সমাজ সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও যেন মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে আমাদের সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়ে প্রধান উপদেষ্টা গর্বিত ও অনুপ্রাণিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করলাম, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে তার মাধ্যমে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সময়ের আবর্তে অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্‌যাপন কালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী যে উদ্যোগ প্রতিবছর নিচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

এর আগে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনী প্রধান।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া

কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করবো না : প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় ৩ ঘন্টা আগে
অনলাইন ডেস্ক  

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে একটি বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। পরিবারে মতভেদ থাকবে, বাগ্‌বিতণ্ডা হবে, কিন্তু আমরা কেউ কারও শত্রু হবো না। কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করবো না। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কাউকে ধর্মের কারণে শত্রু মনে করবো না। আমরা সবাই সমান। কেউ কারও ওপরে না এবং কেউ কারও নিচে না এই ধারণা আমরা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ।

বাংলাদেশে সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনীতি সুসংহত করণে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে। তাই, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

তরুণদের সৃজনশীলতার বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করে করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তরুণ সমাজ সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও যেন মেধার ভিত্তিতে নিজ নিজ সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে পারে আমাদের সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়ে প্রধান উপদেষ্টা গর্বিত ও অনুপ্রাণিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করলাম, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে তার মাধ্যমে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সময়ের আবর্তে অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্‌যাপন কালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী যে উদ্যোগ প্রতিবছর নিচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

এর আগে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনী প্রধান।