সিনিয়র রিপোর্টার
দুদক সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, সংস্কার কাজ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিসহ দুদক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ভয়াবহ যে চিত্র ধরা পরেছে তাতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা ছাড়া উপায় নেই।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আইডিইবি ভবনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সবায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি অন্যায় এবং অপরাধ। রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সকলে সম্মিলিতভাবে দুর্নীতি করেছে, যা তারুণ্যরা রুখে দিয়েছে। বৈষমবিরোধী আন্দোলনে অন্যতম প্রধান ছিল রাষ্ট্রের দুর্নীতি। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে দুর্নীতিবাজরা রাষ্ট্র কাঠামো দখল করে রেখেছে, যাতে সব অন্যায় ও দুর্নীতি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এদেশের মানুষ দুর্নীতিবাজ নাহ তবে এমন একটা রাষ্ট্র কাঠাম সৃষ্টি করা হয়েছে যা বিগত সরকারের দুর্নীতিকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কার কেন হবে এটি সংস্থার জন্য অনেক অপমানজনক। আগে দুর্নীতি দমন কমিশন যে সকল দুর্নীতি চিন্তা করতাম সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়ে যখন কাজ শুরু করেছি আগের যে ভাবনা তার সম্পূর্ণরূপ পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এমন একটা সময় এসে পৌঁছেছি যখন দুর্নীতিবাজদের পুরস্কৃত করা হয়। সারা বছর দুর্নীতি করে বিগত সরকারের আমলারা সকল দুর্নীতিবাজদের কালো টাকা সাদা করার প্রথাও চালু করেছেন। তাই আমলাতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক চর্চার পরিবর্তন ছাড়া দেশের দুর্নীতি দমন কখনোই সম্ভব নয়।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, সৎ প্রজন্ম তৈরি করতে পারলে দুর্নীতিবিরোধী সমাজ গঠন করা সহজ হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেবল প্রতিকারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা নয় সবার মনে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা জাগ্রত করতে হবে।
সভাপতির বক্তেব্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, দেশের উন্নয়নে বড় বাধা দুর্নীতি, যা নিয়ন্ত্রণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতি দমনে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই, নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি না করলে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। প্রতিনিয়ত দুর্নীতির অভিনব পদ্ধতি অনুসরণ করছে দুষ্কৃতিকারীরা। এর সাথে আমাদের দুর্নীতি দমন কার্যক্রম প্রতিনিয়ত নতুন ভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তাছাড়া জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
এর আগে, সকাল ৮টায় জাতীয় পতাকা এবং দুদকের পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত গেয়ে, বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে কমিশনের সব মহাপরিচালককে সঙ্গে নিয়ে সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরে দুদকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।