অনলাইন ডেস্ক : বিজিবিকে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত বিজিবি পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ২২৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সীমান্ত রক্ষাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেওয়া, বিভিন্ন দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ দেশ গঠনমূলক বিভিন্ন কাজে বিজিবির ভূমিকা ও পেশাদারত্ব প্রশংসার দাবিদার। বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে এ বাহিনীকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজিবির (সাবেক বিডিআর) সাহসী ও গৌরবময় ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার বাঙালি সদস্য মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে দুইজন বীরশ্রেষ্ঠ, আটজন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীকসহ সর্বমোট ৮১৭ জন সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বীরত্ব ও ঐতিহ্যের গৌরবমণ্ডিত এক সুশৃঙ্খল বাহিনী। তিনি বলেন, দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার তাদের দেশপ্রেম, সততা এবং অটুট মনোবল। সীমান্তের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা ও চোরাচালান বন্ধ করতে বিজিবি সদস্যদের হতে হবে দৃঢ় ও নির্ভীক। একইভাবে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় হতে হবে দায়িত্বশীল ও জনবান্ধব।
তিনি আরও বলেন, উন্নত সুশৃঙ্খল বাহিনীর সফলতা নির্ভর করে সত্যবাদিতা এবং প্রতিটি স্তরে চেইন অব কমান্ড প্রতিষ্ঠার ওপর। উপদেষ্টা এ সময় চেইন অব কমান্ড সুদৃঢ়ভাবে অনুসরণ করে সততার সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) নাসিম আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিগত বছরে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে উপদেষ্টা ৩২ বিজিবি সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন। এ বছর ১২ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক (বিজিবিএম), ২৪ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক (পিবিজিএম), ১২ জনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক-সেবা (বিজিবিএমএস) এবং ২৪ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক-সেবাসহ (পিবিজিএমএস) সর্বমোট ৭২ জন বিজিবি সদস্যকে বিভিন্ন পদকে ভূষিত করা হয়। পরে উপদেষ্টা বিজিবি আয়োজিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।