সিনিয়র রিপোর্টার : অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি জানতে চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই ও এনডিআইয়ের পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সিইসি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি প্রি-ইলেকশন এসেসমেন্ট মিশন (মার্কিন সরকারের প্রতিনিধি নয়) এসেছে। এরইমধ্যে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকারের দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে দলটি এসেছে মূলত প্রি-এসেমেন্টের জন্য। তারা কী ভূমিকা রাখবে আমরা জানি না। আমাদের ইলেকশন কমিশনের রোল, কার্যক্রম ও দায়িত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে ইসি কী রোল প্লে করে, সরকারের ভূমিকা কতটুকু, কীভাবে রোল প্লে করে; সরকারের সঙ্গে ইলেকশন কমিশনের সমন্বয় কীভাবে হয়, যার মাধ্যমে পুরো ইলেকশন প্রসেসটা তুলে নিয়ে আসি- তাদেরকে জানিয়েছি। জেনে এখন তারা কী করবেন, আমরা জানি না। পরে তারা দেশে ফিরে গিয়ে হয়ত এটা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা কোনো পর্যবেক্ষক টিম পাঠাবেন কি পাঠাবেন না, পাঠালে কীভাবে পাঠাবেন।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের ফোকাস ছিল অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন-এমনটি জানিয়ে সিইসি বলেন, তাদের মূল ফোকাসটা কী ছিল তারা এসেসমেন্ট করতে এসেছেন। মূল ফোকাসটা হচ্ছে ফ্রি, ফেয়ার, পার্টিসিপেটরি, পিসফুল ইলেকশন।
এর আগে সোমবার (৯ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের প্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ থেকে ১২ অক্টোবর ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থা, বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে।
বৈঠকে সিইসি ছাড়াও চার কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন। অন্যদিকে মার্কিন পর্যবেক্ষক দলে রয়েছেন রিক ইনডারফার্ত, মারিয়া চিন আব্দুল্লা, মারিও মাইত্রি, জেমি ক্যানডেস সাক্স স্পাইকারম্যান, আকাশ কুল্লুরি, বোনি গ্লিক, জামিল জাফের, জো কাও প্রমুখ।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি যাচাই করতে ঢাকায় পৌঁছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দলের সাত সদস্য। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক-নির্বাচন সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করবে তারা। সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং তাদের সহায়তাকারীরা ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করবে।
প্রতিনিধিদলের কার্যক্রম সম্পর্কে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার জানান, দলটি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, নারী সমাজ, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন সংস্থা এবং বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং ঢাকার বিদেশি মিশনের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলবে।
সফর শেষে প্রতিনিধিদলটি বিবৃতি দেবে উল্লেখ করে ব্রায়ান শিলার জানান, ইতিবাচক প্রবণতা এবং উদ্বেগের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি তারা কিছু সুপারিশ তুলে ধরবেন। সর্বোপরি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের দিন সীমিত আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাবে কিনা, তা নির্ধারণ করা হবে এ প্রতিনিধিদলের সুপারিশের মাধ্যমে।
এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৭ থেকে ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করবে যুক্তরাষ্ট্রের ৬ সদস্যের প্রাক-নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দল। তবে আরও একজন বাড়িয়ে ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে।