সিনিয়র রিপোর্টার : বিএনপির ডাকা রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঠেকাতে রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় দেড় লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৭০ হাজার পুলিশ, ৬৫ হাজার আনসার ও ৫ হাজার র্যাব সদস্য।
অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবরোধ কর্মসূচিতে নগরবাসীর নিরাপত্তা দিতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, আনসার, নৌ-পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) মোতায়েন করা হয়েছে গত সোমবার রাত থেকে। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে টহল দিচ্ছে বিজিবি। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, পদ্মা সেতু থেকে যশোর, খুলনা ও বরিশাল, ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিজিবির সেক্টর থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে যে কোনো কর্মসূচিতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অবরোধের নামে ভাঙচুর ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের চেষ্টা করলে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘অবরোধ কর্মসূচিতে কোনো ধরনের নাশকতকামূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করা হলে র্যাব সেটা প্রতিহত করবে। র্যাবের চেকপোস্ট থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স টহল দেবে। সারা দেশের র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মাঠে কাজ করবে।’
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন জানান, গত সপ্তাহে অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচিতে পুলিশ যেভাবে প্রস্তুত ছিল এবারও সেভাবেই দায়িত্ব পালন করবে। রাজধানীর নিরাপত্তায় থাকবে ১৯ হাজার সদস্যের বিশাল টিম। তারা ডিএমপির আওতাধীন ৫০টি থানা এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে। নিরাপত্তায় দিনরাত ২৪ ঘণ্টা আটটি ক্রাইম ও আট গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনারদের (ডিসি) নিজ এলাকায় তদারকি ও সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজিবি সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত থেকেই মহাসড়কগুলোতে বিজিবি টহল দিতে শুরু করেছে। মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে কেউ যেন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে না পারে, সেজন্য বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সেক্টরগুলোতে।
উল্লেখ্য, রেল, সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগ নির্বিঘ্ন রাখতে ‘অপারেশন সুরক্ষিত যাতায়াত’ শুরু করছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। এ লক্ষ্যে সারা দেশে ৬৫ হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। রবিবার ও সোমবার এই দুই দিন রেল স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে রেললাইনে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সতর্কভাবে দৃষ্টি রাখবে। রেললাইন রক্ষায় সারা দেশে ১৪৭৬টি পয়েন্টে ১০ হাজার আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ৫ হাজার ২৯৬টি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৫৫ হাজার অঙ্গীভূত আনসার নিজেদের দায়িত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও আশপাশের এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে।