সিনিয়র রিপোর্টার : বিএনপি মানুষ মেরে সরকারের পতন চায় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তারা আবার মানুষ পোড়ানো শুরু করে দিয়েছে। রাজনীতি যদি মানুষের জন্য হয়, সেই মানুষ মেরে তো আর ক্ষমতায় যাওয়া যায় না।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এদিন সকাল ১০টা ১০মি. ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের তেজগাঁও কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার উৎখাত করবে, সে জন্য আন্দোলন। কী আন্দোলন? ২৮ অক্টোবর তাদের অগ্নি সন্ত্রাস। চিফ জাস্টিসের বাড়ি আজ পর্যন্ত কেউ কখনো আক্রমণ করে না। এই বিএনপির সন্ত্রাসীরা চিফ জাস্টিসের বাড়ি আক্রমণ করল, ভাঙচুর করল। জাজরা যেখানে থাকে-জাজেস কোয়ার্টার, সেখানে তারা আক্রমণ করেছে। তারা সাংবাদিকদেরও ছাড়েনি। তাদেরই সাংবাদিক, সব সময় তাদের (সংবাদ) কাভার করতে যায়। তাদেরকে ধরে পেটাল, তাদের ধরে মারল, তাদের ওপর হামলা করল।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মহিলা আওয়ামী লীগ এবং মহিলা যুবলীগ মিছিল নিয়ে আসছিল। যেভাবে তাদের রাস্তায় ফেলে অত্যাচার করেছে! সেই অত্যাচারের কথা তারা লজ্জায় বলতে পারে না। এমনভাবে, এত অমানবিকভাবে, তাদের মাটিতে ফেলে, কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে, বলতে গেলে, এক ধরনের পাশবিক অত্যাচার করা। এইভাবে মেয়েদের ওপর তারা অত্যাচার করেছে। পুলিশ কী দোষ করেছিল আমি জানি না। সেই পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে মারার পর যখন পুলিশ বেহুঁশ হয়ে গেছে, মাথার হেলমেটটা ফেলে দিয়ে সেখানে কুপিয়েছে এবং সেখানে কতগুলো পুলিশকে তারা আহত করেছে। আনসারকে হত্যা করেছে।
অ্যাম্বুলেন্সে রোগী যাচ্ছে, সেই অ্যাম্বুলেন্সের ওপর আক্রমণ। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ঢুকে গাড়ি পুড়িয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে, পুলিশকে মেরেছে। আনসারকে মেরেছে। রেলগাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। কমিউটার ট্রেন পুড়িয়ে দিয়েছে এবং রেল লাইনের পাত কেটে রেখে দিয়েছে যাতে বড় ধরনের একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়। এই অ্যাকসিডেন্ট হলে কী হবে?সাধারণ মানুষ মারা যাবে। তারা মানুষকে মেরে সরকারের পতন ঘটাতে চায়। রাজনীতি যদি মানুষের জন্য হয় সেই মানুষ মেরে তো আর সরকারে যাওয়া যায় না। তারা সেই কাজগুলো করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীরা আজকে পরীক্ষা দিতে পারছে না। ডিসেম্বরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হবে। আমাদের লক্ষ্য ছিল যে, নভেম্বর মাসের মধ্যে ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে যাবে। সেটা পরিকল্পনা করা ছিল। বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে, তারা পরীক্ষায় পাস করবে, তাদের রেজাল্ট হবে। এই ৩০ নভেম্বরের আগেই তাদের রেজাল্ট হয়ে যাওয়ার কথা। তারা এখন স্কুলে যেতে পারছে না, কী? হরতাল-অবরোধ। আগুন দিয়ে তারা গাড়ি পোড়াচ্ছে, বাস পোড়াচ্ছে, ট্রেন পোড়াচ্ছে, মানুষের ওপর হামলা করছে। এখানে তারা আবার মানুষ পোড়ানো শুরু করে দিয়েছে।’
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মাথা কোথায়? আমি একটা কথা বুঝি না, বিএনপি কি একটা লোককেও পেল না যে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে দলের চেয়ারম্যান করে রেখেছে। নির্বাচনে আসেন। কার কত দৌঁড়, সেটা আমরা দেখতে চাই। এরই মধ্যে যারা নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিয়েছেন, তাদেরকে আমি স্বাগত জানাই। ধন্যবাদ জানাই।’
নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদেরকে জনগণকে সেবা করার সুযোগ দেবেন। আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আপনাদের সোচ্চার হতে হবে। যেখানেই অগ্নিসন্ত্রাস হবে, কেউ এ ধরনের কাজ করতে যাবে, তাদেরকে শিক্ষা দিতে হবে। আমি বলছি না, আইন হাতে তুলে নেবেন। আপনারা তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘যারা এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন, তাদেরকেও বলবো, আসেন, নির্বাচনে আসেন। কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। আমরা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসতে বলেছি। তাতে কোনো অসুবিধা নেই।’