সিনিয়র রিপোর্টার : বিএনপি দেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দেশের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির অবরোধের ডাকে তাদের সমর্থকদের সমর্থন নাই, কর্মীদেরও নাই।বিএনপির ডাকা অবরোধে রাজধানীতে যেভাবে যানজট, সারা দেশের শহরগুলোতে যানজট। দেশের সব ধরনের কাজ চলছে। এতে তাদের অবরোধের ডাক হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। আর নির্বাচনী ডামাডোল যখন শুরু হবে, তখন এগুলো কেউ মনেও রাখবে না।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরে এসেছে এবং চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সিনেমা হলের সংখ্যা ৬০ থেকে এখন সিনেপ্লেক্সসহ ২০০-তে দাঁড়িয়েছে। আরও অনেকগুলো সিনেমা হল যেগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেগুলোর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে এবং বহুজন সিনেপ্লেক্স করার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে চিন্তাভাবনা করছে, পরিকল্পনা করছে। চলচ্চিত্র হল মালিকরা এ বিষয়ে আরও এগিয়ে আসবেন এ আমার প্রত্যাশা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি আমীর হামজা, সহ-সম্পাদকদ্বয় ফারুক আহম্মদ এবং সামিনা ইসলাম নীলা, আইন সম্পাদক আব্দুল মতিন প্রধান এবং সদস্যদের মধ্যে মো. ঈশা খান, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. চাঁন মিয়া, মীর্জা আব্দুল খালেক, ডা. আতিকুর রহমান প্রমুখ।
এবার ‘আওয়ামী লীগের ৭১-৭২ জন এমপি মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছে’ এ প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতি নির্বাচনেই কিছু প্রার্থী বাদ পড়ে। এবার আগে থেকেই বলা হয়েছিল- যারা জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে গেছে বা যারা যেকোনো কারণে বিতর্কিত হয়েছে, তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। সে কারণেই এবার অনেক বেশি প্রার্থী বাদ পড়েছে। সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা যেমন আছেন, এর বাইরে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে দলের পক্ষ থেকে দলের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা নানাভাবে তদন্ত করাচ্ছিলেন। সে রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে জনপ্রিয়তার নিরিখে ও দলের প্রয়োজনীয়তা দুটিই বিবেচনা করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীতা নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ২০১৪ সালে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলো সবাইকে কিন্তু পেনাল্টি দিতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবার সেই কথাটি মনে করিয়ে দিয়ে কোনো ছোটখাট দল থেকেও এমন কি কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চায় সেটিকে নিরূৎসাহিত না করার কথা বলেছেন। আমাদের দল থেকে নয়, অন্য দল থেকে নানাভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়, যেমন আমার নির্বাচনী এলাকায় অনেকে, প্রায় পাঁচ-ছয়জন প্রার্থী হয়েছেন। এটাকে যেন নিরূৎসাহিত না করা হয়, এই কথাটাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে, এবার বহু রাজনৈতিক দল, প্রায় ৩০টার মতো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছে। আজকেও কয়েকটি দল এ ঘোষণা দিয়েছে। বহু বিএনপি নেতা তৃণমূল বিএনপি থেকে কিংবা অন্যান্যভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পদক্ষেপ নিয়েছে। কোন দল অংশগ্রহণ করলো সেটার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ আছে কি না সেটি। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।’
আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ নির্বাচন করবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৪ দলীয় জোটবদ্ধগত নির্বাচন করবো সেটি আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। আপনারা জানেন, ২০০৮ সালেও আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করেছিলাম। সেবারও কিন্তু প্রায় ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিলো। পরে মহাজোটের মধ্যে সমন্বয় করা হয়েছিল। গতবারও তাই করা হয়েছিল। এবারও ২৯৮ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন করলে জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিবৃতি বিক্রি করে। তাদের নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। দেশে যেমন কিছু বিবৃতিজীবী আছে, আন্তর্জাতিকভাবেও কিছু বিবৃতিজীবী আছে। এত যে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হচ্ছে সেটি যেমন বিবৃতিতে আসে না, অন্যটাকে মুখ্য করা হয়, এই বিবৃতিজীবীদের নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না, এটার কোনো গুরুত্ব নাই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য বিবৃতি দেয়, গাজায় হত্যাকান্ড হলে চুপ থাকে আর বাংলাদেশে কাউকে ঘুষি মারলে বিবৃতি দেয় এই সমস্ত বিবৃতি নিয়ে কথা বলতে চাই না, এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নাই।