ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী সৌদি আরব: প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 118

সিনিয়র রিপোর্টার : সৌদি আরবকে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল চুক্তি সই যা সৌদি আরব বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উদাহরণ। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা ও আস্থা। আমরা সৌদি আরবকে সবসময় কাছাকাছি পেয়েছি। 

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) ও রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের (আরএসজিটিআই) মধ্যে কনসেশন চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে সই করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আরএসজিটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিন্স অ. ফলেই।

এর আগে সৌদি আরবের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খালিদ আল ফালিহ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সফররত সৌদি আরবের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানসহ সৌদি বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল প্রকল্পটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আশার বাতিঘর। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই আধুনিক টার্মিনালটি আমাদের বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়াবে এবং নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য সহজতর করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির পথও সুগম করবে। এটি বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করবে।’

রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কনসেশন চুক্তি সইয়ের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রকল্পটি বাংলাদেশ-সৌদির মধ্যে একটি শক্তিশালী ও টেকসই অংশীদারত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই কনসেশন চুক্তি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের দুই দেশের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি এবং অটল অঙ্গীকারের উদাহরণ। এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র আরও জোরদার করবে। চুক্তিটি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ‘আরএসজিটিআই যে সুনামের সঙ্গে জেদ্দা পোর্ট টার্মিনালসহ অন্যান্য টার্মিনাল পরিচালনা করছে, সেই দক্ষতা ও প্রযুক্তিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে। আমরা এমন একটি ভবিষ্যতের অপেক্ষায় আছি যেখানে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির একটি চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি আস্থা-সহযোগিতার জন্য আমি সৌদি সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চাই। বিশেষ করে সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য আরও ধন্যবাদ জানাই, সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী ও তার প্রতিনিধিদলের প্রতি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আপনাদের সবার অঙ্গীকার আমরা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ সরকারি বেসরকারি অংশীদারত্বে (জি টু জি) ভিত্তিতে পরিচালনা করবে রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই)। আরএসজিটিআই সৌদি সরকার মনোনীত একটি স্বনামধন্য গ্লোবাল টার্মিনাল অপারেটর। জেদ্দা পোর্ট টার্মিনালসহ বিশ্বের বিভিন্ন টার্মিনাল পরিচালনা করছে আরএসজিটিআই। আরএসজিটিআই আগামী ২২ বছরের জন্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে। দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাসের মাধ্যমে অর্থনীতি লাভবান হবে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী সৌদি আরব: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

সিনিয়র রিপোর্টার : সৌদি আরবকে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল চুক্তি সই যা সৌদি আরব বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উদাহরণ। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা ও আস্থা। আমরা সৌদি আরবকে সবসময় কাছাকাছি পেয়েছি। 

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ পরিচালনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) ও রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের (আরএসজিটিআই) মধ্যে কনসেশন চুক্তি সই হয়। চুক্তিতে সই করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আরএসজিটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিন্স অ. ফলেই।

এর আগে সৌদি আরবের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খালিদ আল ফালিহ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সফররত সৌদি আরবের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানসহ সৌদি বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল প্রকল্পটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আশার বাতিঘর। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই আধুনিক টার্মিনালটি আমাদের বন্দরের সক্ষমতা আরও বাড়াবে এবং নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য সহজতর করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির পথও সুগম করবে। এটি বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করবে।’

রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কনসেশন চুক্তি সইয়ের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রকল্পটি বাংলাদেশ-সৌদির মধ্যে একটি শক্তিশালী ও টেকসই অংশীদারত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই কনসেশন চুক্তি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সমৃদ্ধির জন্য আমাদের দুই দেশের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি এবং অটল অঙ্গীকারের উদাহরণ। এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র আরও জোরদার করবে। চুক্তিটি বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ‘আরএসজিটিআই যে সুনামের সঙ্গে জেদ্দা পোর্ট টার্মিনালসহ অন্যান্য টার্মিনাল পরিচালনা করছে, সেই দক্ষতা ও প্রযুক্তিজ্ঞান কাজে লাগিয়ে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে। আমরা এমন একটি ভবিষ্যতের অপেক্ষায় আছি যেখানে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির একটি চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি আস্থা-সহযোগিতার জন্য আমি সৌদি সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চাই। বিশেষ করে সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য আরও ধন্যবাদ জানাই, সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী ও তার প্রতিনিধিদলের প্রতি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আপনাদের সবার অঙ্গীকার আমরা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নবনির্মিত ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল’ সরকারি বেসরকারি অংশীদারত্বে (জি টু জি) ভিত্তিতে পরিচালনা করবে রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই)। আরএসজিটিআই সৌদি সরকার মনোনীত একটি স্বনামধন্য গ্লোবাল টার্মিনাল অপারেটর। জেদ্দা পোর্ট টার্মিনালসহ বিশ্বের বিভিন্ন টার্মিনাল পরিচালনা করছে আরএসজিটিআই। আরএসজিটিআই আগামী ২২ বছরের জন্য পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে। দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাসের মাধ্যমে অর্থনীতি লাভবান হবে।