সৈয়দ আফজাল বাকের/ এস এম বাপ্পী : নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের মাদক ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ। ঢাকার বাইরে থেকে আসা মাদকের বড় মজুদখানাও এই ক্যাম্প। মাদককে কেন্দ্র করে ক্যাম্পে খুনোখুনির ঘটনাও ঘটছে। তবে এখানে অভিযান চালাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেনেভা ক্যাম্পের ভেতরে অসংখ্য অলিগলি থাকায় মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে ক্যাম্পের বাইরে আনা কঠিন বলে জানান। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অভিযানে গিয়েও অনেক সময় শূন্য হাতে ফিরে আসতে হয়। এ ছাড়া অভিযানে গেলে নারী-পুরুষ মিলে হামলা করে। এই সিন্ডিকেটের আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হল- তানভীর, মনির, আরিফ, মুন্না, সীমা, রাজা, বিল্লাল, আরমান, রাকিব, মুক্তার, সোলেমান, মুক্তার, চুন্না কসাই, বিল্লাল ও গুড্ডু।
ক্যাম্পের বাসিন্দারা বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এখানে মাদকের শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানে দু-এক খুচরা বিক্রেতা গ্রেফতার হয়। তবে গডফাদাররা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই ক্যাম্পের মাদকের মূল নিয়ন্ত্রক ইশতিয়াক। শীর্ষ এই মাদক ব্যবসায়ী বিলাসবহুল গাড়িতে করে বিভিন্ন সময় ক্যাম্পে আসে। তবুও তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুঁজে পায় না। তার ঘনিষ্ঠ দুই সহযোগী নাদিম ওরফে পচিশ ও আরশাদ ক্যাম্পে থেকেই মাদক ব্যবসা চালায়। ইশতিয়াকের হয়ে তারা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের সহযোগী পাচু সেলিম, সাথী, রাজিয়া ও শান্তি এবং তানভীর, মনির, আরিফ, মুন্না, সীমা, রাজা, আরমান, রাকিব, মুক্তার, সোলেমান, চুন্না কসাই, বিল্লাল ও গুড্ডু পুরো ক্যাম্পে মাদক ছড়িয়ে দেয়। ।
দেশের মাদক ব্যবসার কারনে যেমন ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ তেমনি ভয়াবহ বেকারত্ত্বের কারনে মাদক ব্যবসার দিকে ঝুকছে। ঢাকা শহরের বিশ ফোড়া দেশের জেনেভা ক্যাম্পগুলো। এসব জেনেভা ক্যাম্প জুড়ে গড়ে উঠেছে ভয়াবহ মাদকের নেটওয়ার্ক। মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে সারাদিনই চলে মাদকের বেচাকেনা। দিনে দুপুরে এসব মাদক ব্যাবসায়ী মাদক ব্যবসায় লিপ্ত আর এ কারনে সাধারণ ভুক্তভোগীরা চোখের সামনে মাদক বেঁচাকেনা হলেও তাদের কিছুই বলার নেই- কারন এর পেছনের শেকড় অনেক গভীরে। সাধারণ মানুষ কেউ কিছু বলতে গেলেই রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় থেকে এসব সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষের উপর চড়াও হয়।
জেনেভা ক্যাম্পের ফকিন্নী কাল্লু , গুড্ডু, গেদা গুড্ডু, জাবেদ, ফুলু জাবেদ, ছুট্টুর ভাইসহ তার পরিবার এই মাদক ব্যবসার সাথে জাড়িত। এই ছুট্টুর নামে মোহাম্মদপুর থানায় ৩১ টি মামলা রয়েছে সে মোস্তাকিন মার্ডার মামলার আসামী এ ছাড়া অস্ত্র চাঁদাবাজি ও মারামারি সহ অনেক মামলা রয়েছে তার নামে। এক মামলায় ১৬ বছরের সাজা হলেও সে এখন জামিনে এসে চাঁদাবাজি করে। এমন কোন লোক নেই যে, তার কাছ থেকে সে চাঁদা নেয় না। পুলিশ এবং প্রশাসন সব জানে তবুও সে অজ্ঞাত কারণে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকেই এসব মাদক ও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। জেনেভা ক্যাম্পের এসব মাদকের গডফাদার বনে গেছে সে। রানির তিনটি মেয়ে ও ছুট্টুর ৩ ভাই ভাগনি এই মাদেকের সাথে জড়িত। তাদের এই নেটওয়ার্কে আছে মনসুরের বউ জোহরা। আরমান ছুটুর শালা নিজেকে ৩২ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সেক্রেটারী দাবী করে এসব মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্ন ওঠে আওয়ামী যুবলীগের সেক্রেটারী হয়ে কিভাবে মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে? শোনা যায় আরমানের নামে মাদকের ৯টি মামলা আছে। কয়েকদিন আগেও গাঁজার বান্ডিল সহ ধরা পড়ে বাবর রোড কাউন্সিলর অফিসের সামনে। ইমতিয়াজ, সিয়ালা ছুটু আরমান ফকিরার ছেলে সেক্টর ইনচার্জ এরা ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত । এসব মাদক ব্যবসায়ী ধরা ছোয়ার বাইরে থাকছে দীঘর্দিন ধরে। এদের ধরা না গেলে যুব সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। তাই যে কোন মুল্যে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে আইনের আওতায় আনা জরুরী তা না হলে মাদকের ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।