অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতবিরোধী শক্তি রয়েছে। নির্বাচনের সময় এবং মাঝেমধ্যে তারা ভারতবিরোধী সেন্টিমেন্ট তৈরির চেষ্টা করে। তবে এই শক্তি ধীরে ধীরে দুর্বল হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ভারতের নয়াদিল্লিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আগে ভারতবিরোধী মনোভাব ছিল। এই মনোভাব বিএনপি-জামায়াত তৈরি করেছিল, তবে এখন তা নেই। বাংলাদেশে কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে, যারা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের চেষ্টা করে। তারা অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চায়। কিন্তু সরকার সতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতবিরোধী, চীনবিরোধী, যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী, এমন বিভিন্ন স্লোগান বা পোস্টার রয়েছে। যা মালদ্বীপের ‘ইন্ডিয়া-আউট’ স্লোগানের মতো। তবে এসব বিষয়, ভারতবিরোধী স্লোগান আগে যেমন কাজ করত, এখন তেমন কাজ করে না। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বাণিজ্য বৃদ্ধি। ভারতের কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ফিরে এসেছেন। যা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় সাহায্য করেছে, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ভারত আমাদের পাশে ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে কম চেষ্টা করেনি। তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত এবারের নির্বাচনকেও বাধাগ্রস্ত করেছে। তারা প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের বাসভবনে হামলাসহ সহিংসতা চালিয়েছে, যা নজিরবিহীন। এরপরও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভারতের অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশে আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা ভারতের জনগণ, নাগরিক সমাজ এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার ক্ষেত্রে একটি গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
তিস্তা ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নয়াদিল্লিতে তার দুই দিনের সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের উচিত মিয়ানমার থেকে উদ্ভূত ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করা। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী আশ্রয় নেওয়ায় ভারতের মতো বাংলাদেশও সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
৩৪০ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী ও সৈন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই ইস্যুতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত (ভারতের সঙ্গে)। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেও আলোচনা করছি এবং তারা সীমান্তরক্ষীদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক, বলেন হাছান মাহমুদ।
আমরা বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষীদের হত্যার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি বলে জানান তিনি।