অনলাইন ডেক্স : বেসরকারি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি, বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ ৪টি দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল থেকে সারা দেশে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এই কর্মবিরতি চলছে। তবে হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগকে এই কর্মসূচির বাইরে রাখা হয়েছে। শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আসা এসব চিকিৎসকরা। সেখানে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে মানবন্ধন করেন তারা। এরপর পদযাত্রা করে অবস্থান নেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনের রাস্তায়।
যে সব দাবি নিয়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন তা হচ্ছে, ট্রেইনি ডাক্তারদের মাসিক ভাতা ৫০ হাজার এবং ইন্টার্ন ডাক্তারদের মাসিস ভাতা ৩০ হাজার করতে হবে। এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, ননরেসিডেন্ট ডাক্তারদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করতে হবে। বিএসএসএমইউ এর অধীন ১২ প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রেসিডেন্ট এবং নন রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ভাতা পুনরায় চালু করতে হবে। এছাড়া চিকিৎসক সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনেরর সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, গত ৯ মাস ধরে ট্রেইনি ডাক্তাররা তাদের ভাতা থেকে বঞ্চিত। সেই সঙ্গে প্রাইভেট ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট এবং ডিপ্লোমা ট্রেইনিদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাতা আরেক দফা বাড়ানোর কথা ছিলো জানুয়ারি মাস থেকে। কিন্তু আমাদের শুধু আশ্বাসের উপরেই রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের পরিবারের ভরণপোষণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের ৪ দফা দাবি না মেনে নিলে ৪৮ ঘণ্টার পর আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন পরিষদের সভাপতি জাবের মো. আব্দুল্লাহ বলেন, পোস্টাগ্রাজুয়েটদের সাথে আমরা মিলিত হয়ে আমাদের ভাতা ৩০ হাজার করার দাবি জানাচ্ছি। এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। এক বছর আগেও এই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। পাঁচ মাস ধরে আমরা সকল মেডিকেলের পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দিচ্ছি। কিন্তু কোন আশ্বাস পাইনি।
তিনি বলেন, এই কর্মসূচির বাইরে থাকবে সব হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। জরুরি বিভাগে আমাদের ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে না নিলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো।
এ সময় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অবস্থান করা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের কাছে ৪ দাবি ও কর্মবিরতির কথা জানান এসব চিকিৎসকরা। পরবর্তিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি তোমাদের কাজটা হাতে নিলাম। কাল বা পরশু সময় করে একটি মিটিং করবো বিষয়টি নিয়ে। যত দ্রুত সুরাহা করা যায় সেটি আমি করবো। এরপর তোমাদের জানাবো।
তিনি বলেন, ইতিপূর্বে তোমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে কি হয়েছে সেটি আমাকে বলবে না। আমি নিজে চিকিৎসক, কাজেই আমি তোমাদের সবকিছু জানি। সকল চিকিৎসকের মানসম্মান নির্ভর করে তোমাদের উপর। তোমরা যদি ভালো কাজ করো তাহলে সবাই আমার প্রশংসা করবে। দরকার হলে আমি এটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবো। কারণ তোমাদেরকে ভালোভাবে রাখতে না পারলে আমি কাজ আদায় করতে পারবো না, জনগণ চিকিৎসাসেবা পাবে না। কাজেই তোমরা যার ঘরে চলে যাও।