সিনিয়র রিপোর্টার : দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে ড. ইউনূসের কোনো চিন্তা নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের কোনো কাজে পাওয়া যায় না। ড. মুহাম্মদ ইউনূস জ্যেষ্ঠ নাগরিক। তার প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, দেশে যখন বন্যা হয়, তখন তাকে দেখা যায় না। দেশে যখন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, তখন কোনো বক্তব্য শোনা যায় না। দেশে যখন কোনো দুর্যোগ হয়, তখন তিনি বিদেশে ব্যস্ত থাকেন পুরস্কার নেওয়ার জন্য।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ এ সভার আয়োজন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি কিছুদিন আগে আদালত কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত-সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দেখলাম, তিনি বাকু সম্মেলনে গিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যত পুরস্কার দেওয়া হয় সেসব জায়গায় ড. ইউনূসের লবিস্ট ফার্ম যোগাযোগ করে পুরস্কার আনে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যাকে দেশের কোনো কাজে কোনো সময় পাওয়া যায় না, তাকে যদি কেউ পুরস্কার দিয়ে বেড়ায়, সেটি অত্যন্ত হাস্যকর।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ৯.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বেগে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন যে অপশক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পটভূমি তৈরি করেছিল, হত্যায় জড়িত ছিল, শুধু বঙ্গবন্ধু নয় স্বাধীনতারও বিরোধিতা করেছিল, সেই অপশক্তির ধারাবাহিক অপশক্তি এখন দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ভেস্তে দিতে, দেশকে পেছেনে নিয়ে যেতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা প্রকাশ্যেই দেশকে পেছনে নেওয়ার জন্য ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ শ্লোগান দেয়।
এই রাজনৈতিক অপশক্তি বারবার দেশে গণতন্ত্র নস্যাৎ করতে চেয়েছে, সেই চক্রান্তেই বিএনপি গত নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে দিবাস্বপ্নের চূড়া থেকে ধপাস করে পড়ে গিয়ে এখন হাঁটছে, লিফলেট দিচ্ছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা হাঁটেন, দৌড়ান কিন্তু আবার যদি মানুষ পোড়ানোর অপচেষ্টা করেন, জনগণ উচিত শিক্ষা দেবে। বিএনপি দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে চেয়েছিল। সে জন্য তারা নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে।
ঢাকার সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান ও সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েলের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান এবং আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, ইসলামী চিন্তাবিদ শাইখ আকরামুজ্জামান মাদানী, যুবলীগ নেতা মানিক লাল ঘোষ, বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু ও সকল শহীদের আত্মার শান্তি এবং দেশ ও মানুষের কল্যাণ প্রার্থনা করে মোনাজাত করা হয়।