অনলাইন ডেস্ক : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় দাওয়াত না পেয়ে বিয়ে বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইউপি সদস্য (মেম্বার) নাসির উদ্দিন বেপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার(১৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। সময় না থাকায় রিমান্ড শুনানি না করেই আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্য কোনো দিন রিমান্ড শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন মজুমদার।
গতকাল সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে পার্শ্ববর্তী নড়িয়া এলাকা থেকে নাসির বেপারীকে গ্রেপ্তার করে জাজিরা থানা পুলিশ। এর আগে গত শনিবার রাতে জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড চেরাগ আলী বেপারীকান্দি গ্রামের সৈয়দ তাজুল ইসলামের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে দলবল নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাসির বেপারী। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
এ ঘটনার পরদিন রোববার ইউপি সদস্য নাসির বেপারীকে প্রধান আসামি করে ২১ জনের বিরুদ্ধে জাজিরা থানায় মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার। জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিয়ে বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন বেপারীকে আটক করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সময় না থাকায় আদালত রিমান্ড শুনানি না করে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন আদালত। এর আগে আব্দুর রহমান খাঁ নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা।
ভুক্তভোগী সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিরীহ মানুষ। আমার চাচা অসচ্ছল ও অসুস্থ হওয়ায় আমি দায়দায়িত্ব নিয়ে চাচাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করি। সেখানে মেম্বার নাসির বেপারী ও তার লোকজনকে দাওয়াত না দেওয়ায় তারা আমার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বোমাবাজি করে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
উল্লেখ্য, চেরাগ আলী বেপারীকান্দি গ্রামের সৈয়দ তাজুল ইসলাম তার চাচাতো বোনের বিয়ে উপলক্ষে একটি ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসির বেপারীসহ তার লোকজনদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হন নাসির বেপারী ও তার লোকজন। বিয়ে বাড়িতে গায়েহলুদের অনুষ্ঠান চলাকালে নাসির বেপারী ও তার লোকজন ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওই বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় বিয়ে বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর ও বসতঘরেও বোমা হামলা করা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রস্তুতকৃত রান্না করা খাবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয় এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী পিন্টু সরদারের টয়োটা কোম্পানির এলিয়ন এ ফিফটিন মডেলের একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।