অনলাইন ডেস্ক : যখন ইরানকে মারতে একের পর ছক সাজাচ্ছে আমেরিকা তখন যেন তেহরানের ত্রাতা হিসেবে এগিয়ে আসছে আমেরিকার অন্যতম শত্রু রাশিয়া। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই মধ্যপ্রাচের পরাশক্তি এ দেশটিতে ১৫টি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার সরবরাহ করবে পুতিন প্রশাসন।রাশিয়ার সরবরাহকৃত এসব হেলিকপ্টারে থাকবে বর্তমান সময়ের অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির সমন্বয়। তাতে আমেরিকার চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে সহজেই নিজের বিমান বহরকে আরও শক্তিশালী করতে পারবে তেহরান।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইট ভিশন প্রযুক্তিসম্পন্ন ১২টি ও তিনটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার কেনার জন্য মস্কোর সঙ্গে চুক্তি করেছে তেহরান। সদ্য প্রয়াত ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির প্রশাসনের সময় এসব হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি হয়েছিল। ইরানি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন কর্মকর্তার বরাতে এ খবর জানা যায়। ইরানি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ত্রাণ ও উদ্ধার সংস্থার প্রধান বাবাক মাহমুদি জানান, প্রেসিডেন্ট রাইসির সময় রাশিয়ার কাছ থেকে নাইট ভিশন প্রযুক্তিসম্পন্ন ১২টি উদ্ধার হেলিকপ্টার এবং তিনটি অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি করেছে ইরান।
হেলিকপ্টার কেনার এ চুক্তিটি গত এপ্রিলের শেষের দিকে রাশিয়ার বিশেষ হেলিকপ্টার উৎপাদনকারী কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চের দিকে এ অর্ডারের চারটি হেলিকপ্টার সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বলা হচ্ছে- রাশিয়ার সরবরাহকৃত এসব হেলিকপ্টার আকারে বেশ বড় এবং বিশেষায়িত সুবিধা সম্পন্ন হবে। এ ছাড়া চুক্তির আওতায় ৬টি ছোট সহায়ক হেলিকপ্টার সরবরাহ করবে রাশিয়া। এসব হেলিকপ্টারের মোট মূল্য প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার।
গত ১৯ মে আজারবাইজান থেকে ফেরার পথে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী একটি বেল ২১২ মডেলের হেলিকপ্টার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফার পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার টানা অভিযান শেষে পরদিন বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায় উদ্ধারকারী দল।
সত্তরের দশকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেল ২১২ মডেলের কয়েকটি হেলিকপ্টার কিনেছিল ইরান। তবে ইসলামী বিপ্লবের পর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে বিমান মেরামতে আমেরিকার কাছ থেকে কোনো খুচরা যন্ত্রাংশ কিনতে পারেনি তেহরান। এর ফলে চরম বিপর্যের মুখে পড়ে দেশটির বিমান খাত। এমনকি বিপ্লবের পর বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের বহু মানুষ।